প্রতিটি অংশের নির্মাণ সামগ্রী অত্যন্ত উচ্চ মানের হওয়া বাঞ্ছনীয়। ওইসব সামগ্রীর গুণগত মানের উপরে ভাটার দক্ষতা নির্ভর করে। চিমনি কীভাবে তৈরি করলে তার দক্ষতা বাড়ে সেটাই এখানে আলোচ্য বিষয়। এর পাশাপাশি মিয়ানা, বায়ুনালী বা গ্যাসনালী, বাইরের দেওয়াল এবং জানালা কীভাবে তৈরি করতে হয় তার সংক্ষিপ্ত বিবরণও দেওয়া হচ্ছে।
NDZK ভাটার ক্ষেত্রে চিমনি মিয়ানার একবারে মাঝখানে তৈরি করা হয়। IDZK ভাটার ক্ষেত্রে মিয়ানার মাঝখানে কিংবা ভাটার একপাশে চিমনি তৈরি করাই রীতি। চিমনি হয় গোলাকার কিংবা আয়তক্ষেত্রকার হয়ে থাকে। চিমনির মূল অংশ গুলি হল- ক। ভিত এবং খ। দেওয়াল। চিমনির ভিত কতটা গভীরে হবে, দেওয়াল কতটা পুরু হবে তা নির্ভর করে চিমনির উচ্চতা এবং আকৃতির উপরে। নিজের ভার বহন করা ছাড়াও ভূমিকম্প, ঝড় ও তাপ নীরোধক হতে হবে চিমনিকে।
Advertisement
চিমনির ভিত তৈরি করতে হয় কীভাবে?
কোনও দক্ষ ও অভিজ্ঞ স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে চিমনির নকশা তৈরি করানো হয়। চিমনির দক্ষতা বাড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলির উপরে নজর রাখতে হয়-
সুড়ঙ্গের মেঝে থেকে চিমনির ভিত অন্তত পাঁচফুট গভীরে রাখতে হবেl|
ভিতের মেঝে যেন পুরো সমান হয় সেটা দেখতে হবেl|
সেই মেঝের উপরে প্রথমে নদীর বালির একটা স্তর বিছিয়ে দিতে হবে। তার উপরে বালি ও সিমেন্টের শুকনো মিশ্রণের (PCC) একটা স্তর দিতে হবে। এর উপরে ঢালতে হবে পাথর ও ইটের টুকরো মিশিয়ে তৈরি করা কংক্রিট (RCC)। বেশ পুরু করে ঢালতে হবে এই কংক্রিট|
চিমনির এই ভিতের উপরে প্রথম শ্রেণির ইট দিয়ে সুড়ঙ্গের মেঝে পর্যন্ত দেওয়াল গেঁথে তুলতে হবেl|
Advertisement
চিমনি তৈরী করার সঠিক পদ্ধতি কি?
চিমনির বিভিন্ন অংশ
চিমনির অন্য অংশগুলি তৈরি হবে কী ভাবে?
সুড়ঙ্গের মেঝে থেকে 50 ফুট উচ্চতায় চিমনির মূল অংশটি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির ইট ব্যবহার করতে হয়।
কাদা মাটির পাতলা আস্তরণ দিয়ে চিমনির ভিতরের দেওয়ালে প্লাস্টার করা হয়। দুদিন আগে থেকে মাটি ভিজিয়ে তৈরী করতে হয় কাদা, যাতে কোনও বাতাস মাটিও জলের মিশ্রণের আটকে থাকতে না পারে।
চিমনির নির্দিষ্ট উচ্চতা অন্তর অন্তর কংক্রিটের বেড় লাগাতে হয়।
চিমনির ভিতরের দেওয়ালে যেমন কাদা মাটির প্লাস্টার দিতে হয়, তেমনই বাইরের দেওয়ালে সিমেন্টের প্লাস্টার লাগাতে হয়। যাতে বাইরে থেকে জল ভিতরে কোনও ভাবেই না ঢুকতে পারে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।
বায়ু দূষণ মাপার জন্য চারটি অংশ থেকে ধোয়া সংগ্রহ করা হয়l।
চার ইঞ্চি ব্যাসের একটি নল চিমনির ভিতর থেকে বাইরে অন্তত ছয় ইঞ্চি বেরিয়ে থাকে। নলের বাইরের মুখে ঢাকনা থাকে। সময় সময় ওই ঢাকনা খুলে সংগ্রহ করা হয় ধোয়া।
ওই পাইপের নাগাল পেতে চিমনির গায়ে নির্দিষ্ট উচ্চতা অন্তর অন্তর বারান্দা তৈরি করতে হয়। সেই বারান্দার প্রস্থ কমপক্ষে চার ফুট হতে হয়। ওই বারান্দা থেকে পাইপের উচ্চতা তিন থেকে চার ফুটের মধ্যে রাখতে হয়।
সুরক্ষার জন্য ওই বরান্দার সামনে রেলিং লাগানো থাকে। ওই বারান্দা এতটাই শক্ত হয় যে তা অন্তত ৫০০ কেজি ওজন সহ্য করতে পারে। এক সঙ্গে তিন-চারজন লোক সেখানে যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতে পারে তা দেখতে হবে।
ওই বারান্দায় ওঠার জন্য চিমনির বাইরের দেওয়ালে লোহার সিঁড়ি লাগানো থাকে।
বজ্রপাতে যাতে চিমনির কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্য নিতে হবে।
চিমনিতে কোনও ফুটো থাকলে তা ইট ও সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দিতে হয়।
IDZK ভাটায় ফ্যান লাগানো হয় কীভাবে?
চিমনির মেঝেতে বসানো ফ্যান
ভাটার মধ্যে পরোক্ষ ভাবে নিম্নচাপের এলাকা তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় বায়ুনালী ও চিমনির মেঝের মাঝখানে ফ্যান বসানো থাকে। কেন্দ্রীয় বায়ু নালী থেকে একটি নালী পথে বায়ু ফ্যানের সামনের দিকে পাঠানো হয়। ফ্যানের পিছন দিক থেকে আর একটি নালী উন্মুক্ত হয় চিমনির মধ্যে। কোনও মতেই যাতে কেন্দ্রীয় নালীর বাতাস অন্যপথে চালিত না হয়, তাই তাকে ফ্যানের মাধ্যমে উচ্চচাপে চিমনির মধ্যে প্রবেশ করানো হয়।
ভাটার মধ্যে ইটের ধাপের উচ্চতা ন্যূনতম কত হতে হয়?
কেন্দ্রীয় বন, পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রকের 2009 সালের পরিবেশ (রক্ষা) চতুর্থ সংশোধনী বিধিতে এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়েছে-